বিডিনিউজ ১০ ডটকম: লেখক মুশতাক আহমেদকে কারাগারে ‘অবর্ণনীয় নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, কারাবন্দি মুশতাকের এই মৃত্যুতে সারাদেশের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষোভে-বেদনায় ফেটে পড়েছে। তার মতো একজন অরাজনৈতিক, নিরীহ এবং নিজস্ব চিন্তার ফ্রি-ল্যান্সার লেখকের মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়, এর সঙ্গে রাষ্ট্রশক্তি জড়িত।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মারা যাওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এসব অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
কারান্তরীণ অবস্থায় মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় স্বচ্ছ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মুশতাকের শোকাহত পরিবার-পরিজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
পাশাপাশি গত বছর মে মাসে মুশতাক আহমেদের সঙ্গে আটক কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে এখনও কারাবন্দি করে রাখার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি অবিলম্বে কিশোরের মুক্তি দাবি করেন।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংগতি-অসংগতি, নিয়ম-অনিয়ম ইত্যাদি বিষয়ে স্বাধীনচেতা মানুষের অভিমত, বিশ্লেষণ ইত্যাদি প্রকাশের সুযোগ গণতান্ত্রিক বিশ্বে সর্বজনস্বীকৃত। কিন্তু দেশের বর্তমান কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগ সরকার তাদের অপকর্ম ও ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে সমালোচনা প্রকাশ করতে না পারে, সেজন্য নানা কালা কানুন প্রয়োগ করছে। যারা স্বাধীনভাবে গণমাধ্যমে নিজের মত প্রকাশের চেষ্টা করছে, তাদের জীবনে নেমে আসছে এক ভয়ংকর দুর্বিষহ পরিণতি। এরই সর্বশেষ নির্মম শিকার হলেন মুশতাক আহমেদ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মুশতাক লুটপাটকারী কিংবা কালোবাজারি, সন্ত্রাসী ও ডাকাত ছিলেন না। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের মেধাবী ছাত্র মুশতাক আহমেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চিন্তার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ছিলেন। তাই অকালে তার জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দেওয়া হলো।
তিনি বলেন, মুশতাকের এই নির্ভীক আত্মদানের মধ্য দিয়েই দেশের তরুণ সমাজ জেগে উঠবে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক স্বাধীনতাসহ সুশাসন ও আইনের শাসন ফিরে আসবে। মুশতাক সৎ ও সাহসী মানুষ ছিলেন। তিনি চিরদিন অধিকারহারা মানুষের কাছে প্রেরণার আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।